গুরুকুল (শেষ পর্ব)
রবিবার সকালে বিষ্ণুবাবুর কাছে গানের ক্লাস শেষ হলেই সীতানাথ দত্তর (ঘোষ) আগমন হত প্রাকৃতবিজ্ঞান শেখানোর জন্য। তাঁর নানা যন্ত্রপাতি সহযোগে হাতেকলমে শিক্ষা রবীন্দ্রনাথের মনে গভীর আগ্রহ সৃষ্টি করত। তিনি পাত্রভর্তি জলের মধ্যে কাঠের গুঁড়ো মিশিয়ে আঁচে বসিয়ে যেদিন প্রমাণ করেছিলেন যে উত্তাপ দিলে পাত্রের নীচের জল হালকা হয়ে উপরে ওঠে আর উপরের ভারী জল নীচে নেমে আসে সেদিনের বিস্ময় রবীন্দ্রনাথ জীবনে ভোলেন নি। তাই ‘যে রবিবার সকালে তিনি না আসিতেন যে-রবিবার বালক রবির কাছে রবিবার বলিয়াই মনে হইত না’। বৈদ্যুতিক চিকিৎসার সাহায্যে জটিল অসুখ নিরাময় করে সীতানাথ দত্ত বিপুল খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
উপরোক্ত শিক্ষকগণ ছাড়াও রবীন্দ্রনাথের ইংরাজি সাহিত্যচর্চার অন্যতম প্রেরণাদাতা ছিলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথের বন্ধু অক্ষয়চন্দ্র চৌধুরী, যাঁর সঙ্গে পরবর্তীকালে কবির ‘অসমবয়সী বন্ধুত্ব’ গড়ে উঠেছিল। জোড়াসাঁকোর বাড়িতে অক্ষয়চন্দ্রের ছিল অবাধ যাতায়াত। তিনি ইংরাজি সাহিত্যের এম.এ., কিন্তু বৈষ্ণব পদাবলী, রামপ্রসাদ, নীধুবাবু , শ্রীধর কথক ইত্যাদি প্রাচীন গীতিকারদের বহু গান তাঁর কণ্টস্থ ছিল। সুরে-বেসুরে সেগুলি গেয়ে তিনি শ্রোতাদের মনোরঞ্জন করতেন। রবীন্দ্রনাথের কথায়, ‘আনন্দ উপভোগ করিবার শক্তি ইঁহার অসামান্য উদার ছিল। প্রাণ ভরিয়া রসগ্রহণ করিতে ইঁহার কোনো বাধা ছিল না এবং মন খুলিয়া গুণগান করিবার বেলায় ইনি কার্পণ্য করিতে জানিতেন না’। অক্ষয়চন্দ্রের নিরন্তর প্রশংসা ও উৎসাহ রবীন্দ্রনাথের ভবিষ্যত কাব্যচর্চার ভিতটিকে মজবুত করেছিল।
রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিত্ব-বিকাশ ও চরিত্র গঠনের প্রথম সোপানটি গড়ে দিয়েছিলেন পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৮৭৩ সালে তিনি তাঁকে হিমালয় ভ্রমণের সঙ্গী করে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বালক রবিকে দিয়েছিলেন অবাধ স্বাধীনতা আর প্রকৃতিকে নিবিড়ভাবে চিনে নেবার অফুরন্ত সুযোগ। হিমালয়ের নির্জন অবকাশে পড়িয়েছেন ইংরাজি, বাংলা, সংস্কৃত, জ্যোতিষপাঠ, উপক্রমণিকা ইত্যাদি। এছাড়াও চিনিয়েছেন গ্রহনক্ষত্রের পরিচয়।
সাহিত্য এবং গীতচর্চায় রবীন্দ্রনাথ সবচেয়ে বেশী প্রশ্রয় পেয়েছেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর’এর কাছ থেকে। তিনি বালক রবিকে দিয়েছিলেন কাব্যচর্চার স্বাধীনতা এবং সাহস। রবীন্দ্রনাথের কথায় ‘সে-সময়ে এই বন্ধনমুক্তির না ঘটিলে চিরজীবন একটা পঙ্গুতা থাকিয়া যাইত। জ্যোতিদাদাই সম্পূর্ণ নিঃসংকোচে সমস্ত ভালোমন্দর মধ্য দিয়া আমার আত্মোপলব্ধির ক্ষেত্রে ছাড়িয়া দিয়াছেন এবং তখন হইতেই আমার আপন শক্তি নিজের কাঁটা ও নিজের ফুল বিকাশ করিবার জন্য প্রস্তুত হইতে পারিয়াছি।’ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ পিয়ানো বাজিয়ে নতুন নতুন সুর তৈরি করতেন আর রবীন্দ্রনাথ সেই সুরগুলিকে কথার মালায় বেঁধে রাখতেন। এইভাবেই রবীন্দ্রনাথ গান বাঁধবার কৌশল আয়ত্ত করেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথকে যখন কোনো স্কুলেই বেঁধে রাখা সম্ভব হল না তখন হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর শিক্ষার ভার নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন। হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ঠাকুরবাড়ির বালক এবং নবাগতা গৃহবধূদের স্বনিযুক্ত শিক্ষক। ইংরাজির পরিবর্তে তিনি বাংলা শিক্ষার উপরে বেশী গুরুত্ব দিতেন। রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘যখন চারিদিকে খুব কষিয়া ইংরেজি পড়াইবা ধুম পড়িয়া গিয়াছে, তখন যিনি সাহস করিয়া আমাদিগকে দীর্ঘকাল বাংলা শিখাইবার ব্যবস্থা করিয়াছিলেন, সেই আমার স্বর্গগত সেজদাদার উদ্দেশ্যে সকৃতজ্ঞ প্রণাম নিবেদন করিতেছি।’
রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য-প্রতিভা উন্মেষে কাদম্বরী দেবীর অসীম অবদান রবীন্দ্রনাথ কখনও অস্বীকার করেন নি। নতুন বৌঠান ছিলেন কিশোর রবির সাহিত্যচর্চার অন্যতম সঙ্গী। যা-কিছু লিখতেন প্রথমেই তাঁকে দেখিয়ে, তাঁর মতামত নিতেন। কাদম্বরী দেবী ‘কবিযশঃপ্রার্থী’ বালকের অহংকারকে প্রশ্রয় না দিয়ে সমালোচনার মধ্য দিয়ে তাঁর লেখাকে সাবলীল আর পূর্ণতা দিতে সাহায্য করেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথের কবিতা রচনার হাতেখড়ি হয়েছিল ভাগ্নে জ্যোঃতিপ্রকাশ গঙ্গোপাধ্যায়’এর কাছে। রবীন্দ্রনাথের বয়স যখন সাত-আট বছর, একদিন দুপুরবেলায় তিনি তাঁকে ঘরে ডেকে পয়ারছন্দে চৌদ্দ অক্ষর যোগাযোগের রীতিপদ্ধতি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। পদ্যরচনার কলাকৌশলের সেই বিস্ময়-মিশ্রিত অনুভুতি রবীন্দ্রনাথের জীবনস্মৃতিতে অমর হয়ে রয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘পদ্য-জিনিসটিকে এ-পর্যন্ত কেবল ছাপার বহিতেই দেখিয়াছি। কাটাকুটি নাই, ভাবাচিন্তা নাই, কোনোখানে মর্ত্যজনোচিত দুর্বলতার কোনো চিহ্ন দেখা যায় না। এই পদ্য যে নিজে চেষ্টা করিয়া লেখা যাইতে পারে, এ কথা কল্পনা করিতেও সাহস হইত না। গোটাকয়েক শব্দ নিজের হাতে জোড়াতাড়া দিতেই যখন তাহা পয়ার হইয়া উঠিল, তখন পদ্যরচনার মহমা সম্বন্ধে মোহ আর টিকিল না।‘
১৮৬৫ সালের ৭ এপ্রিল দাদা সোমেন্দ্রনাথ আর ভাগ্নে সত্যপ্রসাদের সঙ্গে তিন বছরের শিশু রবীন্দ্রনাথকে কলিকাতা ট্রেনিং একাডেমিতে ভর্তি করে দেওয়া হয়েছিল। কলিকাতা ট্রেনিং একাডেমির শাসনপ্রণালী রবীন্দ্রনাথের শিশুমনে ভীতি ও বিরূপতার সৃষ্টি করেছিল। কিছুদিন পরে, সেখানকার পাঠ চুকিয়ে তাকে নর্মাল স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছিল । রবীন্দ্রনাথের স্বল্প স্কুলজীবনের বেশীরভাগ সময়টাই এখানে কেটেছে। নর্মাল স্কুলের সুপারিন্টেণ্ডেণ্ট গোবিন্দচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্রদের কাছে ভীতিজনক হলেও রবীন্দ্রনাথকে স্নেহের চোখে দেখতেন, তাঁর কাব্যচর্চায় উৎসাহ জোগাতেন। একদিন তাঁর আদেশে রবীন্দ্রনাথের একটা কবিতা লিখে নিয়ে গেলে তিনি কবিকে সঙ্গে নিয়ে ছাত্রবৃত্তি ক্লাসের ছেলেদের কাছে গিয়ে বললেন, ‘পড়িয়া শোনাও’। রবীন্দ্রনাথ উচ্চৈঃস্বরে আবৃত্তি করে সকলের কাছে বাহবা পেয়েছিলেন। নর্মাল স্কুলের আর একজন শিক্ষক, প্রাণিবৃত্তান্ত গ্রন্থের লেখক সাতকড়ি দত্ত ছিলেন রবীন্দ্রনাথের কাব্যপ্রতিভার আর একজন উৎসাহদাতা। জীবনস্মৃতিতে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ইহার পর হইতে তিনি আমাকে উৎসাহ দিবার জন্য মাঝে মাঝে দুই-এক পদ কবিতা দিয়া, তাহা পূরণ করিয়া আনিতে বলিতেন। তাহার মধ্যে একটি আমার মনে আছে—
আমার সেকালের কবিতাকে কোনোমতেই যে দুর্বোধ বলা চলে না, তাহারই প্রমাণস্বরূপে লাইনদুটোকে এই সুযোগে এখানেই দলিলভুক্ত করিয়া রাখিলাম— ইহার মধ্যে যেটুকু গভীরতা আছে তাহা সরোবরসংক্রান্ত— অত্যন্তই স্বচ্ছ।
১৮৭৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রবীন্দ্রনাথ সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হন। (স্কুলের রেজিস্ট্রারে রবীন্দ্রনাথের নাম ভুল করে নবীন্দ্রনাথ লেখা হয়েছিল)। সেখানেও তাঁর মন বসেনি। লিখেছেন, ‘যে-বিদ্যালয় চারিদিকের জীবন ও সৌন্দর্যের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন জেলখানা ও হাসপাতাল-জাতীয় একটা নির্মম বিভীষিকা, তাহার নিত্য-আবর্তিত ঘানির সঙ্গে কোনোমতেই আপনাকে জুড়িতে পারিলাম না’। কিন্তু সেখানকার দুজন শিক্ষক, ফাদার ডি পেনেরাণ্ডা এবং ফাদার হেনরিকে তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন তাঁর জীবনস্মৃতিতে ।
১৮৭৮ সালে দাদা সত্যেন্দ্রনাথের সঙ্গী হয়ে অক্টোবর মাসের ১০ তারিখে রবীন্দ্রনাথ লণ্ডন গিয়েছিলেন ব্যারিস্টার হবার উদ্দেশ্যে। লণ্ডনে স্কট পরিবারে থাকবার সময় তারকনাথ পালিতের উদ্দ্যোগে ১৮৭৯ সালেরে ১৩ নভেম্বর ভর্তি হয়েছিলেন ‘য়ুনিভার্সিটি কলেজে অফ লণ্ডনে’। সেখানকার ইংরাজি সাহিত্যের শিক্ষক হেনরি মরলিকে (১৮২২-১৮৯৪) রবীন্দ্রনাথ আজীবন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন। রানী চন্দকে বলেছেন, ‘হেনরি মর্লির মতো শিক্ষক পাওয়া আমার জীবনের বড়ো একটা সৌভাগ্য । তাঁর পড়াবার পদ্ধতি ছিল নতুন ধরনের । তিনি কখনো শব্দের অর্থ করে করে পড়াতেন না । পাঠ্য বিষয় তিনি ক্লাসে এমন ভাবে আবৃত্তি করে যেতেন, যাতে করে তার বিষয়বস্তু বুঝতে আমাদের কষ্ট হত না । তাঁর আবৃত্তির মধ্যেই তিনি যা বোঝাতে চাইতেন তা পরিষ্কার ফুটে উঠত।
এই নিবন্ধে আর একজনের নাম উল্লেখ না করলে তাঁর উপর অবিচার করা হবে। তিনি আন্না তড়খড়। প্রায় সমবয়সী, সুন্দরী, সপ্রতিভ এবং উচ্চশিক্ষিতা আন্না তড়খড়ের কাছেই প্রথমবার বিলেত যাত্রার আগে রবীন্দ্রনাথ ইংরাজিতে কথাবলা আর বিলিতি আদবকায়দার পাঠ নিয়েছিলেন। খুব স্বল্পকালের সাহচার্যে কিশোরী আন্নার মনে রবীন্দ্রনাথের প্রতি যে গোপন প্রেমের শিহরণ জেগেছিল কবি জীবনের উপান্তে এসেও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে তা মনে রেখেছিলেন।
লেখাপড়া, সংগীতচর্চা আর ছবি আঁকা ছাড়াও রবীন্দ্রনাথ এবং সহপাঠীদের আরও অনেককিছু শিখতে হত। কুস্তিশিক্ষা ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম। শরীরচর্চার দিকে ঠাকুর পরিবারের ছেলেদের মধ্যে ছিল গভীর আগ্রহ। সকালে হাঁটতে যাওয়া, ঘোড়ায় চড়া, সাঁতারকাটা ইত্যাদি ছিল প্রতিদিনের বাঁধা রুটিন। উত্তরদিকের গোলাবাড়ির পাঁচিল ঘেঁসে, মাটি খুঁড়ে, সরষের তেল ঢেলে তৈরি করা হয়েছিল কুস্তির আখড়া। সেখানে হীরা সিং পালোয়ানের কাছে সবাই কুস্তি শিখতেন। এছাড়া মুগুর ভাঁজা, ডন-বৈঠক তো ছিলই। রবীন্দ্রনাথ কুস্তি শিখেছেন কানা পালোয়ানের কাছে। জীবনস্মৃতিতে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘শহরে এক ডাকসাইটে পালোয়ান ছিল; কানা পালোয়ান, সে আমাদের কুস্তি লড়াত। পাঁচিল ঘেঁষে ছিল কুস্তির চালাঘর। সেখানে পালোয়ানের সঙ্গে আমার প্যাচ কষা ছিল ছেলেখেলা মাত্র। খুব খানিকটা মাটি মাখামাখি করে শেষকালে গায়ে একটা জামা চড়িয়ে চলে আসতুম। সকালবেলায় রোজ এত করে মাটি ঘেঁটে আসা ভালো লাগত না মায়ের, তার ভয় হত ছেলের গায়ের রঙ মেটে হয়ে যায় পাছে’।
কুস্তির সাথে সাথে রবীন্দ্রনাথকে জিমন্যাস্টক শিখতে হয়েছিল শ্যামাচরণ ঘোষ নামে তখনকার এক বিখ্যাত ব্যায়ামবীরের কাছে। ১৮৬৯ সালের নভেম্বর মাসে মাসিক ছয় টাকা বেতনে তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছিল। তিনি আসতেন বিকেল সাড়ে চারটের পরে। ‘কাঠের ডাণ্ডার উপরে ঘণ্টাখানেক ধরে শরীরটাকে উলটপালট করে’ জিমন্যাস্টিকের কসরত শেখা চলত। তিনি সম্ভবত ১৮৭১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত স্বপদে বহাল ছিলেন। হিন্দুমেলায় জিমন্যাস্টিক আর কুস্তির জন্য শ্যামাচরণ প্রতিবার পদক আর পুরস্কার লাভ করতেন।
এছাড়াও শিখতে হয়েছিল লাঠিখেলা। এজন্য একজন ওস্তাদ লাঠিয়ালকে শিক্ষাগুরু নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ছিলেন জাতে মুচি। যদিও তাঁর সঠিক নাম জানা যায়নি। সমস্যা হয়েছিল ব্রাহ্মণ হয়ে বালক রবীন্দ্রনাথ কিভেবে নীচু জাতের গুরুকে প্রণাম করবেন। অবশেষে দেবেন্দ্রনাথের নির্দেশে তিনি যথারীতি তাঁর পায়ে হাত দিয়েই প্রণাম করতেন।
রবীন্দ্রনাথের দৈনিক পড়াশুনোর রুটিন ভোরে অন্ধকার থাকতে উঠে লংটি পরে কানা পালোয়ানের সঙ্গে কুস্তি। মাটিমাখা শরীরের উপর জামা চাপিয়ে মেডিকেল কলেজের ছাত্রের কাছে অস্থিবিদ্যা-শিক্ষা। সাতটা থেকে নটা নীলকমল ঘোষালের কাছে পদার্থবিদ্যা, মেঘনাদবধকাব্য, পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি, ইতিহাস, ভূগোল পড়া। এরপর স্নান-খাওয়া সেরে ঘোড়ায় টানা ইস্কুল-গাড়ি বা পালকি চেপে স্কুল। সাড়ে চারটেয় স্কুল থেকে ফিরে জিমন্যাস্টিক শিক্ষা। এর পরেই ড্রয়িঙের ক্লাস। সন্ধ্যা থেকে রাত নটা পর্যন্ত অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ইংরেজি টিউশন। রাত্রি ন’টার পর ছুটি। এর সঙ্গে রবিবার বিষ্ণু চক্রবর্তীর কাছে গান, সীতানাথ ঘোষের কাছে প্রাকৃত-বিজ্ঞান শিক্ষা নিতে হত।
সুন্দর। এত প্রাঞ্জল করে তথ্যসমৃদ্ধ লেখাগুলি আপনি উপস্থাপন করছেন সেগুলি একাধারে মূল্যবান ও সহজবোধ্য। আমরা সমৃদ্ধ হচ্ছি। বিভাগ অনুযায়ী আপনি যেভাবে সাজিয়ে পরিবেশন করছেন সেজন্য আমরা সকলেই উপকৃত হচ্ছি। রবীন্দ্রনাথের নিবিড় পাঠ হচ্ছে আমাদের। আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে।