শঙ্খদা
ডা. পূর্ণেন্দুবিকাশ সরকার | ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১
শঙ্খদার সঙ্গে আমার পরিচয় ২০০৪ সালের শেষের দিকে। চক্ষু-চিকিৎসক হিসাবে নিজের কর্মক্ষেত্রে তখন আমার দিনগুলি কাটছে চূড়ান্ত ব্যস্ততায়। তারই মধ্যে প্রায় আড়াই বছরের পরিশ্রমে শেষ করে ফেলেছি আমার স্বপ্নের প্রকল্প, রবীন্দ্রনাথের সমস্ত গানের ডিজিটাল সঙ্কলন, গীতবিতান আর্কাইভ। প্রথম থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল শঙ্খদাকে আমার কাজটা দেখিয়ে অনুরোধ করব একটা ভুমিকা লিখে দেবার জন্য। কিন্তু প্রথমত তখন উনি আমাকে চেনেনই না, তাছাড়া আমার মত সামান্য মানুষের জন্য কেনই বা নষ্ট করবেন তাঁর মূল্যবান সময়।
তবুও দ্বিধা আর সংশয়ের সঙ্গে একদিন ল্যাপটপ নিয়ে চলেই গেলাম ঈশ্বরচন্দ্র নিবাসের তিন তলার বাসাটিতে। বলাবাহুল্য আগে থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করাই ছিল। একটু দোনামনা করে কলিংবেলের সুইচ টিপবার মিনিট দুয়েকের মধ্যে নিভাজ সাদা ধুতিপাঞ্জাবী পরা, সৌম্যদর্শন শঙ্খদা নিজেই দরজা খুলে বললেন, ‘আসুন’। কথাটার ভিতর এমন এক অকৃত্রিমতার ছোঁয়া ছিল যা একনিমেষে আমার মনের সমস্ত সংকোচ দূর করে দিল। প্রথম দর্শনেই শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে এল। ভেবেছিলাম মানুষটি হয়ত অত্যন্ত গম্ভীর আর দুচার কথা বলেই আমাকে বিদায় করে দেবেন। কিন্তু না। ডানদিকের ঘরটায় বসতে দিলেন, ওঁনার সামনের চেয়ারে। ঘরে আরও কয়েকজন ছিলেন। সারা দেওয়াল জোড়া আলমারিগুলো বইয়ে ঠাসা, ডিভান আর টেবিলেও অসংখ্য স্তূপাকৃত বই। বললেন, ‘বলুন’। বলব কী ! এই বিশাল পণ্ডিত ব্যক্তিত্বের সামনে ক্ষুদ্র আমি কিভাবে দেখাব আমার নিতান্ত শখের কাজটা। হয়ত উনি মনে মনে হাসবেন বা কিছু মামুলি কথা বলে আমাকে সান্ত্বনা দেবেন। তবুও ভয়ে ভয়ে ল্যাপটপ খুলে দেখালাম গীতবিতান আর্কাইভের বিষয়বস্তুগুলি। দেখলেন, যথেষ্ট মনোযোগ দিয়ে। জানতে চাইলাম কেমন হয়েছে। বললেন, ‘বেশ ভালো’। শুনেছিলাম শঙ্খদা খুবই স্বল্পভাষী মানুষ। ওনার ‘বেশ ভালো’ মানে খুবই ভালো হয়েছে। বুঝলাম পাশ করে গিয়েছি। সাহস করে গীতবিতান আর্কাইভের জন্য একটা ভুমিকা লিখে দেবার আবদার জানালাম। আবার একটি মাত্র শব্দ, ‘দেখছি’। ইতিমধ্যে গৃহ-পরিচারিকা চা-সহ স্ন্যাক্স পরিবেশন করে গিয়েছেন। আরও কিছুক্ষণ কথা বলে প্রণাম করে উঠে দাঁড়ালাম। অবাক কাণ্ড, শঙ্খদা দরজা পেরিয়ে সিঁড়ি পর্যন্ত আমাকে এগিয়ে দিতে এলেন। আমার প্রতি বিখ্যাত এই মানুষটির এত বিনয়ী, সহজ ব্যবহার আর সৌজন্যবোধে লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাবার জোগাড়।
দিনকুড়ি পরে একটা ফোন এল, ‘আমি শঙ্খ বলছি, আপনার আর্কাইভের ভুমিকা লেখা হয়ে গিয়েছে। একদিন নিয়ে যাবেন’। আনন্দে দিশাহারা হয়ে পরের দিনেই পৌঁছে গেলাম, এবার একেবারে নির্ভয়ে। সেদিন ছিল রবিবার। প্রতি রবিবার অনেক জ্ঞানীগুণী মানুষ, কবি, সাহিত্যিক, অধ্যাপকের সমাগমে শঙ্খদার বাইরের বসবার ঘর জমজমাট হয়ে ওঠে। আড্ডা, আলোচনা, কবিতাপাঠ আর হালকা হাসিঠাট্টায় সরগরম হয়ে থাকে রবিবাসরীয় সকালগুলো। সঙ্গে দেদার চা এবং জলোযোগের আয়োজন। শঙ্খদা তাঁর পাশের চেয়ারে আমাকে ডেকে নিয়ে একটা সাদা কাগজে ঝকঝকে অক্ষরে নিজের হাতে লেখা গীতবিতান আর্কাইভের ভুমিকাটা দিয়ে বললেন, ‘পড়ে দেখুন ঠিক হয়েছে কিনা’। লেখাটায় একবার চোখ বুলিয়েই গায়ে কাঁটা দিল। এক একটা অক্ষর যেন হিরের টুকরো। আমার নিজের খেয়ালে তৈরি রবীন্দ্রনাথের গানের এই আর্কাইভের জন্য শঙ্খদার মত মানুষ যে কী অসীম গুরুত্ব দিয়ে এই অসামান্য ভূমিকাটা লিখেছেন, সেটা ভেবে আমার চোখ জলে ভরে গেল। আনত হয়ে প্রণাম করে তাঁর আশীর্বাদ চাইলাম।
সেই থেকে আজ পর্যন্ত এই বাড়ির দরজা আমার কাছে অবারিত। কতদিন কত কাজে-অকাজে যে শঙ্খদার বাড়িতে এসেছি তার হিসেব নেই। বলতে বাধা নেই, শঙ্খদার সেদিনের প্রশ্রয় আমার আমার পেশাবহির্ভুত রবীন্দ্রচর্চার অন্যতম প্রেরণা। দেখেছি শুধু আমিই নই, যেকোনো সংস্কৃতি- মনোভাবাপন্ন মানুষের জন্য শঙ্খদার দরজা সদা-উন্মুক্ত। তাঁর জ্ঞানভাণ্ডারের একটু প্রসাদ পেতে, তাঁর সান্নিদ্ধে স্নিগ্ধ হতে, নিজেকে ঋদ্ধ করতে কত মানুষ ব্যাকুল হয়ে ছুটে আসেন। কেউ আসেন তার নতুন প্রকাশিত বই নিয়ে, কেউ আসেন তার লেখার বিষয়ে পরামর্শ নিতে। আবার অনেকেই আসেন তাদের আগামী পরিকল্পনার রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করতে। শুধুমাত্র তাদের প্রিয় কবিকে প্রণাম করবার জন্য, তাঁর কথা শোনবার জন্যই কেউ কেউ যোগ দেন রবিবারের আড্ডায়। কাউকে ফেরাতে, বিরক্ত বা রাগ করতে শঙ্খদাকে কখনও দেখি নি।
শঙ্খদার চরিত্রের এক বিশেষ দিক আমাকে অবাক করে। প্রায় প্রতিটি সৃষ্টিশীল মানুষ প্রচার আর পরিচিতির জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকেন। নিজের কাজকে সবার সামনে তুলে ধরতে, বাহবা পেতে, নিজের ছবিকে নানা প্রচার মাধ্যমে পরিবেশন করবার জন্য নানা পথ অবলম্বন করেন। সেটা মোটেই দোষের বা নিন্দনীয় নয়। কিন্তু শঙ্খদা একেবারে উল্টো। কোনো ধরণের আত্মপ্রচারের সম্ভাবনা দেখলেই তিনি নিজেকে গুটিয়ে নেন। এমনকি ঘরোয়া আড্ডা-আলোচনাতেও তিনি নিজেকে কখনোই জাহির করেন না। তিনি মূলত শ্রোতা, সবার কথা অত্যন্ত মনোযোগ দিয় শোনেন, প্রয়োজন হলে নিজের মতামত জানান। কিন্তু ওই পর্যন্তই। এই প্রসঙ্গে একটা ঘটনার কথা বলি। শঙ্খদা সেবার জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেয়েছেন। আমরা বিকেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছি। চা-সিঙ্গাড়া সহযোগে গল্প চলছে। এমন সময়ে কয়েকজন টিভি আর সংবাদপত্রের সাংবাদিক এসেছেন শঙ্খদার ইন্টারভিউ আর ছবি নিতে। প্রাথমিক আপ্যায়নের পরে তারা ক্যামেরা চালু করে, ব্যুম বাগিয়ে শঙ্খদার ইন্টারভিউ-এর তোড়জোড় শুরু করতেই তিনি বললেন, ‘আগে আপনারা ক্যামেরার আর রেকর্ডিং বন্ধ করুন, তবেই কথা হবে’। সাংবাদিকেরা তো অবাক ! সেকি, এতবড় পুরস্কার-প্রাপ্তির কোনো ইন্টারভিউ হবে না? নানাভাবে শঙ্খদাকে আবদার-অনুরোধ করলেন। শঙ্খদা নিজের সিদ্ধান্তে অনড়।
গীতবিতান আর্কাইভ প্রকাশের আগে বহুবার শঙ্খদার কাছে গিয়েছি নানা তথ্য আর পরামর্শের জন্য। তিনি অকৃপণভাবে আমাকে সাহায্য করেছেন, যখন যা চেয়েছি। ঠিক হয়েছে ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একটা প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে গীতবিতান আর্কাইভের নমুনা সকলকে দেখানো হবে। শঙ্খদাকে অনুরোধ করলেম, ‘আপনার হাত দিয়েই এটা প্রকাশ করতে চাই’। তিনি শুধু মৃদু হেসে নীরব থাকলেন। অর্থাৎ না। যাইহোক বিশ্বভারতীর তৎকালীন উপাচার্য শ্রী সুজিতকুমার বসু, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য-সাংস্কৃতি বিভাগীয় মন্ত্রী শ্রী মানব মুখোপাধ্যায় এবং সারেগামার কর্ণধার শ্রী এস এফ করিম ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে, ২০০৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রোটারি সদনে এক প্রেস-রিলিজের মাধ্যমে গীতবিতান আর্কাইভের নমুনা প্রথম প্রকাশ করা হয়েছিল। শঙ্খদা এসেছিলেন, অডিটোরিয়ামের দ্বিতীয় সারির ডানদিকে আগাগোড়া বসেছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে, চা-পানের আসরে আমার হাত ধরে একান্তে বলেছিলেন, ‘অসাধারণ একটা কাজ করেছেন আপনি’। আমার মনে হয়েছিল আড়াই বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম আজ সার্থক হল। এর চেয়ে বড় পুরস্কার আর কী আশা করতে পারে আমার মত একজন সম্পূর্ণ ভিন্ন পেশার মানুষ।
গীতবিতান আর্কাইভ সারেগামার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছিল ২০০৬ সালের ৫ই মে, বাংলা আকাদেমিতে। সেবারেও হাজার অনুরোধ করেও বরফ গলানো গেল না, শঙ্খদাকে স্টেজে ওঠানো সম্ভব হল না। তবে পুরো অনুষ্ঠান আর ডেমোনেস্ট্রেশন দেখলেন দর্শকাসনে বসে। গীতবিতান আর্কাইভ উদ্বোধন করেছিলেন শ্রীমতী সুচিত্রা মিত্র এবং শ্রী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। অনুষ্ঠান শেষে স্টেজ থেকেই দেখলাম, টিভি আর প্রেসের সাংবাদিকরা শঙ্খদাকে কিছু বলবার জন্য পাকড়াও করতেই উনি চট করে পালিয়ে গেলেন।
গীতবিতান আর্কাইভের পরেও আমি থেমে থাকি নি। কিছুদিনের মধ্যেই গীতবিতান তথ্যভাণ্ডার আর রবীন্দ্রকবিতা আর্কাইভের কাজে হাত দিয়েছিলাম। দুটি প্রকল্পই অত্যন্ত বিশাল আর সময় সাপেক্ষ। এর জন্য প্রতিনিয়ত শঙ্খদার দ্বারস্থ হতে হয়েছে। কত দুষ্প্রাপ্য বই, পত্রপত্রিকা তিনি আমাকে দিয়েছিলেন আমার কাজের প্রয়োজনে। একটা জিনিস অনুভব করেছি, শঙ্খদার মত মানুষের প্রশ্রয়ে, ডাক্তারি পেশার বাইরে আমি যেটুকে রবীন্দ্রচর্চা করেছি বা করছি, তা বৃথা যাবে না। শঙ্খদার বাড়িতে সেই সময়ে বহু জ্ঞানীগুণী মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছি। তবে একটা ব্যাপারে মাঝে মাঝে আমাকে বিব্রত হতে হয়েছে। শঙ্খদার কাছে কেউ এলে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য বলতেন, ‘ইনি পূর্ণেন্দুবিকাশ সরকার। একজন বিশিষ্ট চোখের ডাক্তার। ইনিই গীতবিতান আর্কাইভটি তৈরি করেছেন, যেটা এক অসাধারণ কাজ’। একথা শুনে একঘর লোকের সামনে সত্যিই আমি লজ্জা পেতাম। তবে মজা লাগত, রবীন্দ্রকবিতা আর্কাইভ প্রকাশের পরে যখন বলতেন, ‘ইনি ডাক্তার সরকার। গীতবিতান আর্কাইভ আর রবীন্দ্রকবিতা আর্কাইভ সংকলন-দুটি ইনিই করেছেন। আর হ্যা, উনি চোখের ডাক্তারিও করে থাকেন’।
২০১৮ সাল। রবীন্দ্রকবিতা আর্কাইভের কাজ শেষ হয়েছে। আমারা ঠিক করলাম আনুষ্ঠানিক প্রকাশের আগে একটা প্রেস কনফারেন্স করতে হবে। দিন পাওয়া গেল জুন মাসের ছয় তারিখে, প্রেসক্লাবে। হয়ত রাজি হবেন না, তবুও একদিন ভয়ে ভয়ে কথাটা জানিয়ে বললাম, ‘শঙ্খদা আপনি কি প্রেস কনফারেন্সে থাকতে পারবেন কিছুটা সময়ের জন্য’? একটু ভেবে বললেন, ‘সাধারণত আমি কোনো প্রেস কনফারেন্সে যাই না, তবে এটাতে যাবই’। আনন্দ আর বিস্ময়ে আমি কিছুক্ষণ কথাই বলতে পারলাম না।
রবীন্দ্রকবিতা আর্কাইভে আছে ২৪৫ জন শিল্পীর কণ্ঠে ৩৫০০টি রবীন্দ্রকবিতার ৫০০০টি আবৃত্তি, গান ইত্যাদি। আমাদের একান্ত ইচ্ছা ছিল এই আর্কাইভে শঙ্খদারও কয়েকটি আবৃত্তি থাকুক। এজন্য আমি আর বর্ণালী কতবার ওনাকে অনুরোধ করেছি, ছেলেমানুষের মত বায়না করেছি, নানাভাবে বিরক্ত করেছি। উনি শুধু হেসে বলেছেন আগেকার সেই গলা নাকি আর নেই, তাই ইত্যাদি।
৬ই জুন রবীন্দ্রকবিতা আর্কাইভের প্রেস কনফারেন্স সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছিল। শঙ্খদা ছাড়াও ছিলেন শ্রী পবিত্র সরকার, শ্রী সুজিতকুমার বসু, পঙ্কজ সাহা, এবং আরও অনেকে। আর্কাইভ সম্বন্ধে নিজের বক্তব্যের মাঝে শঙ্খদা মজা করে বলেছিলেন, ‘এরা ২৪৫ জন শিল্পীকে দিয়ে আবৃত্তি রেকর্ড করিয়েছেন কিন্তু আমাকে সুযোগ দেন নি’। বুঝুন কান্ডটা ! পরের দিন আনন্দবাজার পত্রিকায় লেখা হল ‘রবীন্দ্রকবিতা আর্কাইভে পাঠ করবেন শঙ্খও’। তবে ২০১৮ সালের ২৮ শে আগস্ট রবীন্দ্রসদনে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে শঙ্খদার হাতেই মুক্তির পেয়েছিল রবীন্দ্রকবিতা আর্কাইভের সংকলনটি।
শঙ্খদার জীবনের কত ঘটনা, গল্প, অভিজ্ঞতা শুনেছি তাঁর কাছে। সেসব আমার চিরকালীন সম্পদ হয়ে রয়েছে। তাঁর কাছে গেলেই মনে হয় এক অদ্ভুত আনন্দময় পরিবেশের মধ্যে রয়েছি। মাঝে মাঝে এমন মজার মজার কথা বলেন, মন্তব্য ছুঁড়ে দেন বা টিপ্পনি কাটেন, আমরা হাসি লুকাতে পারি না। তাঁর অসাধারণ তীক্ষ্ণ স্মৃতিশক্তি আর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা আমাকে বারবার অবাক করেছে। গীতবিতান তথ্যভাণ্ডারের কাজ করবার সময়ে যেকোনো গান কবিতা বা ঘটনা নিয়ে যখন যা জানতে চেয়েছি, সাথে সাথেই তার সমাধান করেছেন, কোনো বই বা রেফারেন্স না দেখেই। গীতবিতান তথ্যভাণ্ডার সম্বন্ধে শঙ্খদার উৎসাহ আর আগ্রহ আমার দীর্ঘ পরিশ্রমের কষ্ট ভুলিয়ে দিয়েছে। বইটা প্রকাশকের ঘরে বহুদিন ছাপা-না-হয়ে পড়ে থাকায় আমি যখনই বিরক্ত আর হতাশ হয়ে যেতাম, শঙ্খদাই আমাকে সান্তনা দিয়েছেন, ধৈর্য্য ধরতে বলেছেন। আর সিগনেট প্রেস থেকে বইটা প্রকাশের পরে প্রথম কপিটা যেদিন শঙ্খদার হাতে তুলে দিলাম, সেদিন তাঁর চোখে যে আনন্দ আর তৃপ্তির ছায়া দেখেছিলাম, সেই ছবি মনের হার্ডডিস্কে চিরকালের মত স্থায়ী হয়ে রইল, কোনোদিন ডিলিট করা যাবে না।
২০১৯ সালের ৮ই জানুয়ারি রোটারি সদনে শঙ্খদার হাতেই মোড়ক উন্মোচন হয়েছিল গীতবিতান তথ্যভাণ্ডারের। উপস্থিত ছিলেন শ্রী পবিত্র সরকার, শ্রী সুদেব গুহঠাকুরতা, শ্রীমতী প্রমিতা মল্লিক, শ্রী সুবীর মিত্র এবং কলকাতার বিশিষ্ট গুণীজনেরা।
আজ ৫ই ফেব্রুয়ারি, শঙ্খদার ৯০তম জন্মদিন। পিতৃসম যে মানুষটির স্নেহ আর ভালোবাসা জীবনের প্রতিটা মুহূর্তের সঙ্গে মিশে রয়েছে, তাঁকে জানাই সশ্রদ্ধ প্রণাম।
ব্লগে এযাবৎ যতো লেখা পড়েছি,আজকের লেখা আমার সবথেকে ভালো লাগলো।যেন এক নিবিড় আন্তরিকতা,শ্রদ্ধা,ভালোবাসার অনবদ্য সংমিশ্রণ, যা শুধু মুগ্ধ হয়ে পড়ে যেতে হয়,আর মনকে নিবিড় শ্রদ্ধার ভালোবাসায় জারিত করতে ইচ্ছে হয়।
খুব সুন্দর স্মৃতিচারণ। লিখন ও মনোরম।
মাথা নত হয়ে আসে আপনি ই
Oshadharon shraddhyargho.. Pronam janai apnader dujonke..
Tathyo jene samriddho holam.. Bhalo thakben..
পূর্ণেন্দু বাবু আপনি রবীন্দ্র মহাসাগরে সাবমেরিন। প্রণাম নেবেন।
Ki je valo laglo dada! Apni nijeo khub valo lekhen ebong valo Doctor. Amader jonyo..amader paroborti projonmer jonyo ja porishrom korechhen…Asamvab guni shrodhheyo Sri Shanka Ghosh mahashoyer jahurir chokh seti chinte vul koren ni. Onar shatayu kamona kori. Pronam janai nabatipor ei sristishil manushtike.
শঙ্খ ঘোষের সঙ্গে আপনার পরিচয় ও স্মৃতিচারণ পড়ে মুগ্ধ হলাম।একজন চোখের ডাক্তার হয়ে আপনার এই রবীন্দ্রভক্তি আর গভীর অশ্যয়ন আমাকে মুগ্ধ করে।পাশাপাশি শঙ্খ ঘোষের প্রতি এই শ্রদ্ধাবোধও স্বতঃস্ফূর্ত। আপনার কাজের মূল্যায়ন যোগ্যতম মানুষই করেছেন। অনেক শ্রদ্ধা আর শুভেচ্ছা জানাই। –দীপান্বিতা সেন
অসাধারণ এক স্মৃতিচারণ যা আমাদেরকে
মুগ্ধ করে ।
প্রদীপ জ্বালানোর কৃতকর্মে সলতে পাকানোর একটি ভূমিকা থাকে। সেটিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এই বিশাল কর্মকাণ্ডে অনেকেই আপনার সঙ্গে আছেন। শঙ্খদার মতো গুণী ব্যক্তিও ছিলেন এবং তিনি আপনাকে যথাযোগ্য সহায়তা করেছেন জেনে ভালো লাগলো। এই গুরুত্বপূর্ণ কাজে বর্তমান বাংলা সাহিত্য জগতের শ্রদ্ধেয় অগ্রজ প্রতিনিধি স্থানীয় কবি যে আপনাকে সহায়তা করেছেন জেনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধায় আপ্লুত হলাম। তাঁর মতো মানুষের নিকট আমরা এটিই আশা করি। আপনাকে ধন্যবাদ আপনি এই অভিজ্ঞতা প্রকাশ্যে এনে আমাদের ধন্য করলেন। এগিয়ে চলুন। আমরাও সমৃদ্ধ হই।
দারুন লাগলো। আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। শঙ্খ দার প্রতি আমার শ্রদ্ধা।।