সপ্তম পর্ব
সপ্তম পর্ব
অজানার পথে ১৭৮৪ সাল। গ্রীষ্মের এক ভয়ংকর দুপুর। আকাশে একটুকরো মেঘ নেই। সূর্য যেন তার সমস্ত তেজ দিয়ে পৃথিবীকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে চাইছে। বাতাসে আগুনের ছটা। পাখি-পাখালিরা গাছের ঘন ডালপালার আড়লে নিজেদের লুকিয়ে রাখবার ব্যার্থ চেষ্টায় দিশাহারা, নিশ্চুপ। রাখালের বাঁশির সুর কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছে! গবাদি পশুদের চারণভূমি আজ যেন তপ্ত মরুভূমি। এখানে …
Continue reading “শনিবারের ব্লগ “
বর্ষা-মেঘের আঁচল খসিয়ে যখন শরৎঋতু আমাদের দোরগোড়ায় উঁকি দেয়, তখন আশ্বিনের শারদপ্রাতে আপামর বাঙালির মন উন্মন হয়ে ওঠে মা দুর্গার মর্ত-আগমনে। দুর্গাপূজা বাঙালির বৃহত্তম আনন্দযজ্ঞ, অন্যতম সামাজিক মিলন-অনুষ্ঠান। যে দুর্গাপূজাকে ঘিরে উচ্ছাস আর উন্মাদনা উৎসবের দিনগুলিতে প্রত্যেক বাঙালিকে নেশাগ্রস্ত করে রাখে, জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে তার প্রভাব কেমন ছিল তা জানতে আমরা অনেকেই উৎসুক হয়ে থাকি। ঠাকুরবাড়ি …
Continue reading “ঠাকুরবাড়ির দুর্গাপূজা “
গুরুকুল (শেষ পর্ব) রবিবার সকালে বিষ্ণুবাবুর কাছে গানের ক্লাস শেষ হলেই সীতানাথ দত্তর (ঘোষ) আগমন হত প্রাকৃতবিজ্ঞান শেখানোর জন্য। তাঁর নানা যন্ত্রপাতি সহযোগে হাতেকলমে শিক্ষা রবীন্দ্রনাথের মনে গভীর আগ্রহ সৃষ্টি করত। তিনি পাত্রভর্তি জলের মধ্যে কাঠের গুঁড়ো মিশিয়ে আঁচে বসিয়ে যেদিন প্রমাণ করেছিলেন যে উত্তাপ দিলে পাত্রের নীচের জল হালকা হয়ে উপরে ওঠে আর উপরের …
রবীন্দ্রনাথের স্কুলজীবন কখনোই সুখের ছিল না। কান্নাকাটি করে সত্যপ্রসাদ আর সোমেন্দ্রনাথের সঙ্গে ক্যালকাটা ট্রেনিং স্কুলে ভর্তি হলেও, স্কুলের মোহ প্রথমদিনেই ঘুচে গিয়েছিল। আসলে রবীন্দ্রনাথের শিক্ষার ভিত গড়ে উঠেছিল বাড়ির পরিবেশে, গৃহশিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে। মূল কাণ্ডারী ছিলেন সেজদাদা হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি স্বেচ্ছায় রবীন্দ্রনাথসহ অন্যান্য ভাইদের, এমনকি ঠাকুরবাড়িতে নবাগত বালিকা গৃহবধূদের পড়াশোনার ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। আর …
Continue reading “গুরুকুল -২ “
রবীন্দ্রনাথের স্কুলজীবন কখনোই সুখের হয় নি। কান্নাকাটি করে সত্যপ্রসাদ আর সোমেন্দ্রনাথের সঙ্গে ক্যালকাটা ট্রেনিং স্কুলে ভর্তি হলেও, স্কুলের মোহ প্রথমদিনেই ঘুচে গিয়েছিল। জীবনস্মৃতিতে লিখেছেন ‘ঘরগুলা নির্মম, ইহার দেয়ালগুলা পাহারাওয়ালার মত – ইহার মধ্যে বাড়ির ভাব কিছুই না, খোপওয়ালা একটা বড়ো বাক্স। কোথাও কোন সজ্জা নাই, রঙ নাই, ছেলেদের হৃদয়কে আকর্ষণ করিবার লেশমাত্র চেষ্টা নাই। ছেলেদের …
সারস্বত সমাজ (১৮৮২) : কলকাতার ৯২ নম্বর বউবাজার স্ট্রীটে বঙ্কিমচন্দ্রের বাড়িটি ছিল তৎকালীন বিশিষ্ট সাহিত্যিকদের মিলন ক্ষেত্র। রবীন্দ্রনাথ তখন সদ্য যৌবনে পা দিয়েছেন। তিনিও মাঝে মাঝে ঐ আসরে উপস্থিত হতেন বঙ্কিমচন্দ্রের সান্নিধ্য লাভের আশায়। আর সেই যোগাযোগের অনুপ্রেরণাতে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ আর রবীন্দ্রনাথের উৎসাহে ১৮৮২ সালের চৈত্র মাসে সারস্বত সমাজের সূচনা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল কেবলমাত্র সাহিত্যচর্চা …
Continue reading “সারস্বত সমাজ “
শুরুর কথা সম্ভবত ১৮৯২ সালের মাঝামাঝি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্দ্যোগে জোড়াসাঁকোতে ড্রামাটিক ক্লাব-এর সূচনা হয়েছিল। এর প্রাতিষ্ঠানিক নাম ‘গার্হস্থ্য নাট্যসমিতি’। রবীন্দ্রনাথের সভাপতিত্বে ঠাকুরবাড়ির দশজন সদস্যকে নিয়ে একটা কমিটি গড়ে প্রত্যেকের কাজ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। মাসিক চাঁদা ছিল পাঁচ টাকা, কিন্তু এককালীন একশ টাকা দিলে ‘মুরুব্বি সভ্য’ হওয়া যেত। বৈঠকখানা বাড়ির অব্যবহৃত তোষাখানাটাই ছিল ড্রামাটিক ক্লাবের …
Continue reading “খামখেয়ালি সভা “
জোড়াসাঁকো নাট্যশালা উনিশ শতকের প্রথমার্ধ। সূচনা হয়েছে বাংলার নবজাগরণের ইতিহাস। রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসুদন দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, অক্ষয়কুমার দত্ত প্রমুখ একগুচ্ছ যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদী মনীষীর উদ্দ্যোগে বাংলার শিক্ষা-সাহিত্য-রাজনীতির দ্রুত পট পরিবর্তন ঘটতে লাগল। আর সেই কর্মযজ্ঞের অন্যতম কেন্দ্রভূমি ছিল জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি। একের পর এক নতুন নতুন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকল কবিতা-গান-প্রবন্ধ-গল্প-সমালোচনা …
Continue reading “জোড়াসাঁকো নাট্যশালা “
১৯৪১ । ২৫ জুলাই – ৭ আগস্ট ২৫ জুলাই । রেলওয়ের স্পেশাল কোচে অসুস্থ রবীন্দ্রনাথকে শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হল অপারেশনের জন্য। মহর্ষি ভবনের দোতলার পাথরের ঘরের বিছানায় তাঁর শয্যা পাতা। শরীর ক্লান্ত । বলছেন, ‘ভালো লাগছে না।’ রানী চন্দ সারাক্ষণ পাশে বসে রয়েছেন, পায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। পাশের ঘরে চলেছে ডাক্তারদের আনাগোনা। ২৬ …
Continue reading “শেষের ক’দিন “