Shanibarer Blog 5 July 25

আমাদের কথা
নমস্কার। শনিবারের ব্লগের সপ্তম পর্বের আজ চতুর্থ পোষ্ট। যথারীতি, গতবারের পোষ্টের অসাধারণ সাড়ায় আমরা আন্তরিকভাবে
কৃতজ্ঞ। গত ১ জুলাই, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে মহাজাতি সদনে আমাকে যে  সম্মাননা জানানো হয়েছে এজন্য আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। 

গতবারের ক্যুইজে অংশগ্রহণকারী প্রায় সকলেই সঠিক উত্তর দিয়েছেন, এটা আমাদের কাছে খুবই সুখের কথা।
গতবারের ক্যুইজে অনেকেই অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের ধন্যবাদ। সঠিক উত্তরদাতারা ৫টি করে পয়েন্ট সংগ্রহ
করেছেন। এবারেও থাকছে একটি সহজ প্রশ্ন। আশা করি এবারও আপনাদের কাছ
থেকে ঠিক উত্তরই পাব।
সরাসরি আমাদের WhatsApp নম্বরে
8240498040 / 9830606220) অথবা
ইমেল করেও আপনার উত্তর পাঠানো যাতে পারে।
আমাদের Email
pbsarkar@gmail.com
যারা প্রথম সর্বাধিক ৮০ পয়েন্ট অর্জন করবেন তাদের সল্টলেকের চিরন্তনী সভাঘরে চা-নের আসরে আপ্যায়িত করা হবে।
সঙ্গে থাকবে বিশেষ প্রীতি
উপহার।
ব্লগটি ভালো লাগলে আপনার পরিচিতজনেদের শেয়ার করবার অনুরোধ রইল। আর প্রতি শনিবার সকালে শনিবারের ব্লগ এ
রাখলে ভীষণ খুশি হব।
নমস্কার
ডা. পূর্ণেন্দুবিকাশ সরকার

যুগের  সন্ধিক্ষণ

পূর্ব প্রকাশের পর
তরুণ সুদর্শন যুবকটির নাম মঙ্গলানন্দ মুখোপাধ্যায়। কুলীন ব্রাহ্মণ। বিশেষ কাজে চলেছেন ভৈরব নদীপথে তার ছোট্টো বজরাটি নিয়ে। ভৈরব নদী আজ শান্ত, নিস্তরঙ্গ। অস্তগামী সূর্যের রঙ্গিন আলপনায় সন্ধ্যার ছায়ামাখা আঁধারটি মায়াময় হয়ে উঠেছে। দিনান্তে বাসায় ফিরে আসা পাখীদের কলকাকলি আর মৃদুমন্দ বাতাস রাত্রির আগমন-বন্দনায় মুখরিত। কিছু পরে মাঝিরা বজরাটিকে পাড়ের এক নিরাপদ জায়গায় নোঙর করলেন। আর এগোনো সমীচীন নয়। সামনের পথ বিপদ সঙ্কুল, হিংস্র পশু আর ঘাতক ডাকাতের দল যেকোনো মুহুর্তে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। মঙ্গলানন্দ বজরা থেকে নেমে এলেন রাতের আশ্রয়ের খোঁজে। চোখে পড়ল দূরে এক আলোকিত অট্টালিকা। পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলেন সেই আলোকমালার দিকে। যেন নিয়তিই তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল এক ভিন্ন জীবনের প্রবেশদ্বারে।
আলোকিত অট্টালিকাটি পূর্বোক্ত দক্ষিণানাথ রায়চৌধুরীর পুত্র শুকদেবের। উচ্চবংশীয় ব্রাহ্মণত্ব ঘুচিয়ে যিনি বোন রত্নমালা আর কন্যা সুন্দরীর জন্য পাগলের মত সুপাত্র খুঁজে  বেড়াচ্ছেন। অথচ ‘পিরলি-বামুন’ শিলমোহরের সুবাদে কোন ব্রাহ্মণ ছেলেই এগিয়ে আসছেন না সুন্দরী, তন্বী, সর্বসুলক্ষণা কন্যাদের পাণি-গ্রহণের আশায়। মঙ্গলানন্দ নিজের বংশ পরিচয় জানিয়ে শুকদেবের কাছে একরাতের জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করলেন।  ছেলেটিকে দেখেই শুকদেব বুঝতে পারলেন বিধাতা আশাপূরণের জন্যই ছেলেটিকে পাঠিয়েছেন তার কাছে। কর্তব্য স্থির করে ফেললেন সঙ্গে সঙ্গে। যথোচিত আন্তরিকতা আর স্নিগ্ধ আতিথেয়তায় ভরিয়ে দিয়ে, নৈশভোজের পরে  অতিথির জন্য বাড়ির সবচেয়ে সুন্দর আর বিলাসবহুল ঘরটির দরজা খুলে দিলেন রতের সুনিদ্রার জন্য। শরীর ও মনের ক্লান্তি ধুয়ে মঙ্গলানন্দ ধীরে ধীরে ঢলে পড়লেন সেই কোমল শয্যায়। নিস্তব্ধ রাত্রির নিঃশব্দ আহ্বানে, শান্তির পাখনায় চড়ে তিনি ধীরে ধীরে হারিয়ে গেলেন স্বপ্নের গভীর, প্রশান্তির অলৌকিক জগতে।
খুব ভোরে মঙ্গলানন্দের ঘুম ভেঙে গেল শাঁখ আর মন্ত্রোচ্চারণের শব্দে। জানলা খুলে দেখলেন, ঝলমলে উজ্জ্বল সকাল। একটু দূরে বসেছে কারও বিয়ের আসর। ছাদনাতলায় মানুষের ছুটোছুটি, ব্যস্ততা। এক সুখের আবেশে ভরে উঠল তার মন। যদিও তিনি কল্পনাও করতে পারেন নি, কী ভীষণ বিপদ আসতে চলেছে তার জীবনে। আসলে ঐ ছাদনাতলায় তখন শুরু হয়েছিল রত্নমালার বিয়ের তোড়জোড়। মঙ্গলানন্দ আনমনে তাকিয়েছিলেন সেই মঙ্গলানুষ্ঠানের দিকে। এমন সময় কয়েকজন পালোয়ান-গোছের লোক মঙ্গলানন্দকে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে সটান বসিয়ে দিলেন বিয়ের পিঁড়িতে। সেখানে কনে বেশে হাজির রত্নমালা। দুহাতে ধরা পানপাতায় মুখ ঢেকে রেখেছেন শুভদৃষ্টির প্রতীক্ষায়।  কি হতে চলেছে অনুমান করে মঙ্গলানন্দের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। রত্নমালা নীচু জাতের ব্রাহ্মণ, তাকে বিয়ে করলে মঙ্গলানন্দের কুল-মান সবই বিসর্জন দিতে হবে। ফেলে আসা জীবন, বাবা-মা, বন্ধুবান্ধব কারও সঙ্গে আর কোনোও সম্পর্ক থাকবে না। ভুলে যেতে হবে কিশোর জীবনের স্মৃতিমাখা মধুর দিনগুলির কথাও। মঙ্গলানন্দ অনেক অনুনয়-বিনয়, কান্নাকাটি করলেন। হাতে-পায়ে ধরতেও বাকি রইল না। কিন্তু সবই বৃথা। শুকদেবকে টলানো গেল না। যাইহোক নতুন জামাইকে আড়াইশো বিঘে জমি আর একটি চাকরি দিয়ে শান্ত করা হল। নিজের ভবিতব্য বুঝতে পেরে, নিজের অতীতের কথা ভুলে গিয়ে, মঙ্গলানন্দ কঠোর বাস্তবকে মেনে নিয়ে নতুন জীবন গড়ার কাজে মন দিলেন।
ক্রমশঃ

কবিকথা 

নাচটা আমার এ জন্মে আর হল না। মা যদি আমার ছেলেবরসে
এই তোমার ছেলের মতন আমায় একটু-আধটু নাচাতেন, তা হলে বয়েসকালে নাচ কাকে বলে তোমাদের দেখিয়ে দিতুম। এখন পা ছুটোই যে অচল ; তারা অনেক আগে থেকেই ধর্মঘট করে বসে আছে। বলে, আমাদের দিকে তো কোনোদিন চাইলে না, হাত নিয়েই তুমি খেলা করেছ। খেলা করেছ। তাই দেখো-না, আজকাল নিজের পায়ে দিতে কত তেল খরচ করছি, তবে না তারা একটু
মুখ তুলে চাইছে মাঝে মাঝে ।

Please rate this

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *