


আমাদের কথা
নমস্কার। শনিবারের ক্যুইজে সপ্তম পর্বের আজ দ্বিতীয় পোষ্ট। বিগত সাত দিন শান্তিনিকেতনে থাকবার জন্য এবারের শনিবারের ব্লগটি প্রকাশ করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। এজন্য অনেকেই আজ, শনিবারের সকালে হতাশ হয়ে আমাকে ফোন করেছিলেন। এই দেরির জন্য সবার কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
গতবারের ক্যুইজে অনেকেই অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের ধন্যবাদ। সঠিক উত্তরদাতারা ৫টি করে পয়েন্ট সংগ্রহ করেছেন।
এবারেও থাকছে একটি সহজ প্রশ্ন। আশা করি এবারও আপনাদের কাছ থেকে ঠিক উত্তরই পাব।
সরাসরি আমাদের WhattsApp নম্বরে (8240498040 / 9830606220) অথবা ইমেল করেও আপনার উত্তর পাঠানো যাতে পারে।
আমাদের Email
pbsarkar@gmail.com
যারা প্রথম সর্বাধিক ৮০ পয়েন্ট অর্জন করবেন তাদের সল্টলেকের চিরন্তনী সভাঘরে চা-পানের আসরে আপ্যায়িত করা হবে। সঙ্গে থাকবে বিশেষ প্রীতি উপহার।
ব্লগটি ভালো লাগলে আপনার পরিচিতজনেদের শেয়ার করবার অনুরোধ রইল। আর প্রতি শনিবার সকালে ‘শনিবারের ব্লগ’এ চোখ রাখলে ভীষণ খুশি হব।
নমস্কার
ডা. পূর্ণেন্দুবিকাশ সরকার

নতুন জনপদ
পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষ ভাগ। বাংলার শাসনভার পাঠান সুলতান নাসির সাহেবের হাতে। নাসিরসাহেবেরর পুরো নাম নাসিরুদ্দীন মাহমুদ শাহ (১৪৩৫-১৪৫৯)। শান্তিপ্রিয় নাসিরুদ্দিন সফলভাবে রাজত্ব করেছেন প্রায় তেইশ বছর ধরে। প্রজাদের সুখসুবিধার জন্য অনেক ভালো ভালো কাজ করে সুনামও কুড়িয়েছেন। তার সাম্রাজ্যের সবচেয়ে বড় জেলাটির নাম যশোর। যশোর বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলের ভৈরব নদীর কোল ঘেঁসে অবস্থিত একটি প্রাচীন জনপদ। রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক দু’দিক থেকেই এই অঞ্চলটির গুরুত্ব অসীম। এছাড়া অবাধ বানিজ্যকেন্দ্র হিসাবে যশোরের ভৌগোলিক অবস্থান ছিল সমস্ত বণিকসমাজের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান যশোরকে ফুলের রাজধানী বলা হয় কেননা যশোরের গদখালি অঞ্চল থেকে বাংলাদেশের ৮০% ফুল সরবরাহ করা হত। বাংলাদেশের অন্যতম ও প্রাচীন সেনানিবাস, সফটওয়্যার ও টেকনোলজি পার্ক, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমি, বহু মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদির সমারোহে যশোর জেলাটি বাংলাদেশে বিশেষ স্থান দখল করে রেখেছিল। বাংলার প্রাচীন ইতিহাস ও সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল দীপ্তির নাম যশোর। এই জনপদ শুধু তার সমৃদ্ধ অতীতের জন্যই নয়, তার অগণিত ঐতিহাসিক নিদর্শন ও মনোমুগ্ধকর দর্শনীয় স্থানের জন্যও ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এক চিরন্তন টানে বাঁধা। ইতিহাসের ছায়ায় ঘেরা যশোরের পথে পথে ছড়িয়ে রয়েছে মুসলিম, হিন্দু ও বৌদ্ধ ঐতিহ্যের অসংখ্য চিহ্ন। প্রাচীন মসজিদ, টেরাকোটার মন্দির, জমিদারবাড়ি, প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা ও ব্রিটিশ আমলের নির্মাণ। এখানকার অসংখ্য স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলি ইতিহাসপ্রেমীদের হৃদয়ে জাগায় গভীর আলোড়ন। শুধু ইতিহাস নয়, প্রকৃতির সৌন্দর্যেও যশোর অনন্য। এককথায় যশোর হয়ে উঠেছিল এমন একটি শহর, যেখানে ইতিহাস, প্রকৃতি ও সংস্কৃতির সুষম মিলনে সৃষ্টি হয়েছিল এক অনন্য পর্যটনপটভূমি। ভ্রমণ-পিপাসুদের কাছে আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। যদিও বর্তমনে নানা রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক কারণে যশোরসহ সমগ্র বাংলাদেশের বিপুল পরিবর্তন ঘটেছে।
যশোরের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের নাম চেঙ্গুটিয়া, খুবই সাদামাটা ছোটো একটি অনুন্নত গ্রাম। ১৮৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত চেঙ্গুটিয়া রেলওয়ে স্টেশনটি তখনকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই স্টেশনটি দর্শনা–যশোর–খুলনা লাইনের অংশ এবং এটি স্থানীয় অর্থনীতি ও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে ।
নিজের রাজত্বের পরিধি বৃদ্ধির জন্য নাসিরুদ্দিন তাঁর বিশ্বস্ত সভাসদ পীর আলিকে চেঙ্গুটিয়া পরগনার দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিলেন সেখানে নতুন লোকালয় গড়ে তোলবার জন্য। পীর আলি কিন্তু তার প্রভুর মত সরল মনের মানুষ ছিলেন না। তাঁর নানান প্যাঁজ-পয়জারের জন্য প্রজাদের প্রায়ই অশেষ দুর্ভোগ পোহাতে হত। সুলতান নাসিরুদ্দিনের নির্দেশ পেয়ে, কিছুটা নিমরাজি হয়ে, লোকলস্কর নিয়ে পীর আলিকে কাজে নেমে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু একটা গোটা শহর গড়ে তোলা তো মুখের কথা নয়। এজন্য দরকার প্রচুর লোকজন, শ্রমিক, মালপত্র, সেগুলি রাখবার গুদামঘর আর উপযুক্ত পরিকল্পনা।
এছাড়াও দরকার একজন স্থানীয় ব্যক্তি যিনি সেখানকার আঁটঘাট, পরিবেশ আর বাসিন্দাদের খুব ভালোভাবে চেনেন, লোকজন তার কথা সম্মানের সঙ্গে মান্য করেন। স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে গভীর পরিচয় আর সমাজ সচেতনতা তাকে কর্মক্ষেত্রের নানা বাধাবিঘ্ন কাটিতে উঠতে সাহায্য করবে। পীর আলি একে রাজপুরুষ তার উপরে তিনি খুবই আয়েসি মানুষ। এইসব ঝঞ্ঝাটের দায়িত্ব কিভাবে সামলাবেন তাই ভেবে আলিসাহেব পড়লেন মহা ফাঁপরে। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। উপায় বাতলে দিলেন উপরওয়ালাই। স্থানীয় সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ জমিদার দক্ষিণানাথ রায়চৌধুরী একদিন দেখা করতে এলেন পীর আলির দরবারে। দক্ষিণানাথ উদ্দোগী পুরুষ। চেঙ্গুটিয়া পরগণার জমিদারদের মধ্যে তিনি অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সমাজসেবায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে চেঙ্গুটিয়া অঞ্চলে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতির প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছিল। জানালেন নতুন শহর পত্তনের কাজে তিনি সর্বোতভবে সাহায্যের জন্য প্রস্তুত। আলিসাহেব হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন। দক্ষিণানাথের পরিকল্পনা, লোকবল, কঠোর পরিশ্রম আর পীর আলির আর্থিক সহায়তায় ভৈরব নদীর তীরে ধীরে ধীরে জেগে উঠল একটা নতুন জনপদ। দক্ষিণানাথের নাম অনুসারে জনপদটি দক্ষিণডিহি বলে পরিচিতি পেল।

কবিকথা
সকালে বসেছিলুম, গুনগুন করে মাথায় গান আসছিল ; বেশ … কে নিয়ে। অনেকই এল, মজে গিয়েছিলুম। এমন সময়ে …
ক্ষণ বসে ছিল, আমারও গানটান সব কোথায় এলোমেলো হলো
গেল ৷ আর কিছুতেই তাকে আনতে পারছি নে। এখন আর ভালো লাগে না কিছুই। ছুটি, ছুটি চাই এবারে। এই
এইটুকুতেই তো আমার সুখ ; একটু গান, একটু ছবি, এই কবিতা । আর তো আমি কিছুই চাই নে ।


