শনিবারের ব্লগ 4.75/5 (4)

Shanibarer Blog

আমাদের কথা
নমস্কার। বেশ কয়েক বছর অন্তরালে থাকবার পরে আবার নতুন করে শুরু হল জনপ্রিয় শনিবারের ব্লগ।  কোভিড-যুগে প্রতি শনিবার সকাল ঠিক ন’টায় পাঠকের মোবাইলে ভেসে উঠত সেই সপ্তাহের শনিবারের ব্লগ। ক্যুইজ, গল্প, গান, সাময়িক সংবাদ, পুস্তক পরিচয়, স্বাস্থ্য-ভাবনা, কবিকথা, ছবি, কবিতা, প্রশ্নোত্তর, নিয়ে সাজানো শনিবারের ব্লগটি যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।
এবার শুরু হল তার সপ্তম পর্ব। ব্লগের মূল আকর্ষণ শনিবারের ক্যুইজ। প্রতি সপ্তাহে একটি সহজ ক্যুইজ থাকবে।  উত্তরদাতা  সঠিক উত্তরের জন্য  ৫টি পয়েন্ট অর্জন করবেন।
 সরাসরি আমাদের WhattsApp নম্বরে (8240498040) আপনার উত্তর পাঠানো যাবে। অথবা ইমেল করেও পাঠানো যেতে পারে। 
আমাদের Email : pbsarkar@gmail.com
যারা প্রথম সর্বাধিক ৮০ পয়েন্ট অর্জন করবেন, তাদের সল্টলেকের চিরন্তনী সভাঘরের চা-পানের আসরে আপ্যায়িত করা হবে। সঙ্গে থাকবে বিশেষ প্রীতি উপহার।
ব্লগটি আপনার ভালো লাগলে আপনার পরিচিত জনেদের শেয়ার করবার অনুরোধ রইল। আর প্রতি শনিবার সকালে ‘শনিবারের ব্লগ’এ চোখ রাখলে ভীষণ খুশি হব। 
নমস্কার।
ডা. পূর্ণেন্দুবিকাশ সরকার
সাবেক জোড়াসাঁকো
জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি ভারতীয় ঐতিহ্য, স্থাপত্য আর সংস্কৃতির অন্যতম পীঠস্থান। উনবিংশ শতাব্দীর বাঙালির সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে এই বাড়ির বাসিন্দারা গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছিলেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের জন্ম, তাঁর সুদীর্ঘ জীবনের মূল্যবান অংশ, এবং মহানির্বাণ সমাপ্ত হয়েছিল এই বাড়িতেই, যা পৃথিবীর মানচিত্রে জোড়াসাঁকো বাড়িটিকে ইতিহাসের পাতায় অমর করে রেখেছে। শুধু রবীন্দ্রনাথই নন, ঠাকুর-পরিবারের প্রায় প্রতিটি সদস্যের নানাবিধ প্রতিভার উদ্ভাসে ভাস্বর হয়ে রয়েছে জোড়াসঁকোর ঠাকুরবাড়ি। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ধ্যান-ধারণা, দ্বারকানাথ ঠাকুরের বাণিজ্যবোধ ও সমাজচেতনা, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ও সৌরীন্দ্রমোহনের সৃষ্টিশীলতা—সব মিলিয়ে এই ঠাকুরবাড়ি হয়ে উঠেছে এক উজ্জ্বল আকাশমণ্ডল, যেখানে জ্বলে উঠেছিল এক একটি নক্ষত্রপ্রতিভা।
বর্তমানে ভারত সরকার বাড়িটিকে হেরিটজ-ভবন’এর স্বীকৃতি দিয়ে সম্মানিত করেছেন। উত্তর কলকাতার চিৎপুর সংলগ্ন প্রায় পঁইত্রিশ হাজার বর্গমিটার জুড়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এর অবস্থান। তবে প্রথমে শুরু হয়েছিল মাত্র এক বিঘে জমির উপরে নির্মিত ছোট্টো একটা ঘর দিয়ে। আর সেই ইতিহাসও অত্যন্ত চমকপ্রদ। উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বাংলার সাহিত্য-সংস্কৃতি তার খোলনোলচে বদলিয়ে এক যুগান্তকারী বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে নিজেকে নতুন করে মেলে ধরেছিল। সেই ঊষালগ্নের প্রদীপ যিনি জ্বালিয়েছিলেন, সূচনা করেছিলেন বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির এক নবজাগরণের ইতিহাস, তিনি ঠাকুর বংশের পুর্বপুরুষ নীলমণি ঠাকুর, এই বিশাল স্থাপত্যের মূল কারিগর। তাঁর ‘একবিঘে জমির ছোট্টো নির্মাণ’টি ধীরে ধীরে মুকুলিত হয়ে, অজস্র শাখাপ্রশাখা বিস্তার করে একদিন বিশাল মহীরুহে পরিণত হয়েছিল। রেনেসাঁর সেই সন্ধিক্ষণে ঐতিহ্যমণ্ডিত বাড়িটির জৌলুস আর আভিজাত্য সূর্যের আলোর মত ছড়িয়ে পড়েছিল চারিদিকে। চিৎপুরের সীমানা অতিক্রম করে পৌঁছে গিয়েছিল শহরের কোনায় কোনায়, ভারতের নানা প্রান্তে এমনকি বিদেশের মাটিতেও। ব্যবসায়িক সাফল্য, সাহিত্য, সঙ্গীত, নাট্যচর্চা, শিল্পকলা, দার্শনিকতা ইত্যাদি বহুবিধ বৈচিত্রের একত্র সমাবেশ ঘটেছিল এই বাড়িতেই।
কিন্তু কালের নিয়মে ধীরে ধীরে সেই সুদিনেও ভাঁটা পড়তে শুরু করেছিল। মানুষের ভীড়, কোলাহল, স্বার্থপরতা আর কূটকাচালীতে ধীরে ধীরে সেই গৌরবের দিনগুলিতে নেমে এসেছিল অবক্ষয়ের অন্ধকার।  

অজানার পথে

১৭৮৪ সাল। গ্রীষ্মের এক ভয়ংকর দুপুর। আকাশে একটুকরো মেঘ নেই। সূর্য যেন তার সমস্ত তেজ দিয়ে পৃথিবীকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে চাইছে। বাতাসে আগুনের ছটা। পাখি-পাখালিরা গাছের ঘন ডালপালার আড়লে নিজেদের লুকিয়ে রাখবার ব্যার্থ চেষ্টায় দিশাহারা, নিশ্চুপ। রাখালের বাঁশির সুর কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছে! গবাদি পশুদের চারণভূমি আজ তপ্ত মরুভূমি। এখানে ওখানে ঝোপঝাড়ের আড়ালে শ্বাপদের লম্বা জিভ বের করে হাঁপিয়ে সারা। সেই দুঃসহ দুপুরে, আঁকাবাঁকা খানাখন্দে ভরা কাঁচা পথ ধরে ক্লান্ত পায়ে হঁটে চলেছেন এক প্রৌঢ়  ব্রাহ্মণ। বয়স ষাটের কাছাকাছি। দুচোখে কেবল হতাশা আর শূন্যতা। নিজের ভাইয়ের কাছে প্রতারিত হয়ে, অনেক অভিমানে ঘর ছেড়ে চলেছেন অজানার পথে, একবস্ত্রে। সঙ্গে পুত্র-পরিবার আর গৃহদেবতা লক্ষ্মীজনার্দন। যে ঘর ছেড়ে আজ তিনি অনিশ্চিয়তার পথে নেমেছেন, সে ঘর নির্মাণের পিছনে রয়েছে নিজের কঠোর পরিশ্রম আর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অনেক কষ্টে আয় করা অর্থ। শুধু ঘরই নয় ফেলে এসেছেন সারাজীবনের সঞ্চয় আর আত্মীয়জনেদের। জানেন না সন্তানদের নিয়ে কোথায় রাত্রিযাপন করবেন, আহারেরই বা কি হবে। সামনে শুধুই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কালো অন্ধকার। বেলা পড়ে আসছে। ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর যাত্রীদের হঠাৎ চোখের পড়ল টলটলে জলে ভরা পুকুরঘাট আর পাশের ছায়াঘেরা তেঁতুল গাছটার দিকে। যেন ভগবান মরূদ্যান সাজিয়ে রেখেছেন পথক্লান্ত পথিকদের জন্য। ক্ষণিক বিশ্রামের আশায় সকলে আশ্রয় নিলেন সেই ছায়াতলে। পুজা করলেন গৃহদেবতার, সামান্য কিছু আহারের পরে চোখে নেমে এল তন্দ্রার ঘোর। 
আগামী সংখ্যায় 

কবিকথা

এত অনাদরে মানুষ হয়েছি, কেউ দেখত না আমাদের । ভালোই এক হিসাবে। সবপ্রথম বড়দি,  তার পরেই নতুন বোঠান আমাকে কাছে টেনে নিলেন। সেই প্রথম আমি যেন জীবনে আদরযত্ন পেলুম ৷এত দুর্মূল্য সেটা লেগেছিল তা বলতে পারি নে। এত ভালোবাসা তাঁরা দিয়েছিলেন- এত প্রচুর পরিমাণে। এক হিসাবে আমাকে মাটি করেছেন; পড়াশুনা করতুম না, দেখ-না, চিরকাল কেমন তাই মুখ্য হয়েই রইলুম। মনে পড়ে নতুন বোঠান দুপুরবেলা বালিশে চুল এলিয়ে দিয়ে ‘বঙ্গাধীপ পরাজয়’ পড়তেন— মাঝে মাঝে আমিও পাশে বসে পড়ে শোনাতুম তাঁকে । কোথায় গেল সে- সব দিন।

৩০ জুন ১৯৪১

বর্তমানে গান শোনবার অন্যতম আধার ইউটিউব ও অন্যান্য ডিজিটাল প্লাটফর্ম। ডা. পূর্ণেন্দুবিকাশ সরকারের উদ্ভাবিত প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি স্মার্ট অ্যালবামের QR Code স্ক্যান করলেই আপনার মোবাইলে সরাসরি অ্যালবামের গানগুলি শুনে নিতে পারবেন। 

Please rate this

Join the Conversation

1 Comment

  1. খুব ভাল উদ্যোগ। চলুক, চলুক। আমাদের অফুরন্ত শুভেচ্ছা রইল।

Leave a comment

Leave a Reply to Surajit Basu Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *