
পূর্ব প্রকাশিতের পর
নাসিকে রবীন্দ্রনাথের দিনগুলি কেটেছে ‘আলস্যবিজড়িত ছুটির মেজাজে’। আমরা বারবার দেখেছি, একটানা ছুটি উপভোগ রবীন্দ্রনাথের অদৃষ্টে কোনোদিনই ছিল না। কলকাতা কিংবা শান্তিনিকেতন, যখনই ছুটির সম্ভাবনা দেখা দিত, নানা কাজ-অকাজের ভিড়ে সে পালাবার পথ পেত না।
না, নাসিকে তেমন বিভ্রাট ঘটেনি। কিন্তু আর্থিক সমস্যার জন্য ‘পড়ে-পাওয়া-চোদ্দআনা’র মত সেই ছুটিটাও নিরুপদ্রব হতে পারেনি। সে সময় রবীন্দ্রনাথের নিজস্ব আয় বলে কিছুই ছিল না। জোড়াসাঁকোর জমিদারি থেকে মাসে দেড়শ-দুশো টাকার ভাতাই ছিল তাঁর একমাত্র সম্বল। কিন্তু বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গ, আপ্যায়ন, এখানে-সেখানে ঘোরাঘুরি ইত্যাদির জন্য কিছু টাকা তো লাগেই, আর সেটা জোগাড় করাই হয়ে উঠেছিল দুষ্কর। একবার ভেবেছিলেন নিজের পুরোনো বইগুলো বিক্রি করে কিছু টাকা যদি পাওয়া যায়। কিন্তু সে পথে না গিয়ে আত্মীয়দের কাছ থেকেই চেয়ে-চিন্তে কাজ চালাতে লাগলেন। কিন্তু তাতেও সামাল দিতে না পেরে প্রিয়নাথকে লিখেছেন, ‘অল্প টাকা হাতে পেয়েছিলুম কিন্তু সে তৎক্ষণাৎ ধার শুধুতে উড়ে গেছে। প্রতিদিনের খুচরো খরচ প্রায় ধার করে চালাতে হয়। জমিদারী থেকে এবারে অল্প টাকা এসেছে– আর দশ পনেরো দিনে বাকি টাকা আসার কথা আছে। যা হোক আমি দ্বিপুর কাছে ঐ তিনশ টাকা ধার করবার চেষ্টা দেখব যদি পাওয়া যায়।’ (চিঠিপত্র ৮, পত্র সংখ্যা ৩২) সেই সঙ্গে ছিল আরও পঞ্চাশ টাকা বন্দোরার ঠিকানায় পাঠাবার আর্জি। এরপর থেকে বহুবার নানা প্রয়োজনে টাকার জন্য রবীন্দ্রনাথকে হাত পাততে হয়েছিল প্রিয়নাথের কাছে, -তা নতুন বই, পোষাক-পরিচ্ছদ, সাংসারিক জিনিসপত্র কেনা, ব্যবসা, মেয়ের বিয়ে, ইত্যাদি যাইই হোক না কেন। প্রিয়নাথও সাধ্যমত রবীন্দ্রনাথকে সাহায্য করে গিয়েছেন। বলা চলে, টাকার চিরকালীন অনটনে জর্জরিত রবীন্দ্রনাথের পাশে যিনি অক্লান্তভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তিনি তাঁর একান্ত আপনজন ও অকৃত্রিম বন্ধু, — প্রিয়নাথ সেন।
বাল্য-বিবাহের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথ বরাবরই সরব ছিলেন। তাঁর ‘স্পষ্ট সমর্থন ছিল যৌবন-বিবাহের প্রতি’। কিন্তু মাত্র চোদ্দো বছর বয়সেই তিনি আদরের বড় মেয়ে বেলার বিয়ের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। কেন ? তখন রবীন্দ্রনাথ নানাভাবে ঋণগ্রস্ত। বন্ধু লোকেন পালিতের কাছে ৫০০০ টাকা ঋণ। প্রায় নিঃসম্বল অবস্থায় স্ত্রীর গয়নাও বিক্রি করতে হয়েছিল। ঠাকুরবাড়ির ঐতিহ্য অনুযায়ী পরিবারের সকলের বিয়ের খরচের অনেকটাই দেবেন্দ্রনাথই বহন করতেন। সম্ভবত সেই কারণে রবীন্দ্রনাথ এই আর্থিক সুযোগটি নিতে চেয়েছিলেন তাঁর মেয়েদের বিবাহের ক্ষেত্রে।
চলবে



কনজাংটিভাইটিস
পুজোর সময়টাতে প্রতি বছরই যেন নিয়ম করে ফিরে আসে কনজাঙ্কটিভাইটিস। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। বর্ষার শুরুতে ভাইরাল জ্বরের প্রকোপ বেড়েছিল। সে দাপট কমতেই ঘরে ঘরে কনজাঙ্কটিভাইটিসের সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে। আক্রান্তের তালিকায় শিশু থেকে বয়স্কেরাও। কনজাঙ্কটিভাইটিস কেবল নয়, ভাইরাসজনিত চোখের আরও সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে।
চোখ ভাল রাখার উপায়
১) এই বিষয়ে চক্ষু চিকিৎসক সাগরিকা চৌধুরী জানিয়েছেন, যদি মনে হয় চোখ কড়কড় করছে, বালি পড়েছে বা চোখ থেকে আঠালো তরল বার হচ্ছে, তা হলে দেরি না করে চক্ষু চিকিৎসককে দেখাতে হবে।
২) ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে আক্রান্তের ব্যবহার করা জিনিস, যেমন রুমাল, তোয়ালে ইত্যাদি ব্যবহার করবেন না।
৩) বার বার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। বাইরে বেরোলে স্যানিটাইজ়ার সঙ্গে রাখতে হবে।
৪) নিজের তোয়ালে, বালিশ বা প্রসাধনী অন্য কারও সঙ্গে ভাগ করবেন না। বিশেষ করে অন্যের ব্যবহার করা কাজল, মাস্কারা, আইলাইনার ইত্যাদি প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করবেন না।
৫) সংক্রমিত হলে টিভি, মোবাইল, ল্যাপটপ দেখা কমাতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় হাত ধুতে হবে বা স্যানিটাইজ়ার লাগাতে হবে। হাত না ধুয়ে নিজের চোখে বা মুখে হাত দেবেন না অথবা খাবার খাবেন না। রোগীকে ওষুধ দেওয়ার পরেও হাত ধুতে হবে।


‘নদী’ কাব্যগ্রন্থটির জন্য উপেন্দ্রকিশোর ছবি এঁকেছিলেন।
ভালো লাগে জেনে যে অবনীন্দ্রনাথ-ও এই বইটির জন্য ছবি এঁকেছিলেন।
তিন দিকপাল একসঙ্গে – কি অসাধারন যোগ!